বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫

আল্লাহর জিকিরের ১০টি উপকারিতা

হৃদয়ের কোমলতা ও জিকিরের ফজিলত
হৃদয়ের প্রশান্তির জন্য জিকিরের গুরুত্ব

জিকিরের ১০ উপকারিতা

কখনো কখনো মানুষের হৃদয় শুষ্ক ভূমির মতো রুক্ষ হয়ে যায়, আবার কখনো হয়ে পড়ে পাথরের মতো কঠিন। তখন ভালো কথা ভালো লাগে না, ভালো কাজে মন বসে না। কারণ হৃদয়ের কঠোরতা মানুষকে আত্মিক প্রশান্তি থেকে বঞ্চিত করে এবং মানসিক অস্থিরতা ও ডিপ্রেশনের দিকে ঠেলে দেয়। এমন অবস্থায় আল্লাহর জিকিরই হৃদয়ের কোমলতা ফিরিয়ে আনার সর্বোত্তম উপায়।

কর্জে হাসানা মানবতার কল্যাণে সুদমুক্ত আর্থিক সহায়তা

আল্লাহ তাআলা বলেন— “যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়, জেনে রেখো, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরগুলো প্রশান্ত হয়।” (সুরা রাদ ১৩:২৮) আরেক স্থানে বলা হয়েছে— “যারা ঈমানদার, যখন তাদের সামনে আল্লাহর নাম নেওয়া হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে।” (সুরা আনফাল ৮:২)

জিকিরের ফজিলতসমূহ

হাদিসে জিকিরের বহু ফজিলত উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১০টি নিচে দেওয়া হলো—

  1. অন্তরের মলিনতা দূর হয়: জিকির হৃদয়ের পাপ ও কালিমা মুছে ফেলে। (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব ২/৩২৭)
  2. আল্লাহ প্রতিদান দেন: বান্দা আল্লাহকে স্মরণ করলে আল্লাহও তাকে স্মরণ করেন। (মুসলিম ২৬৭৫)
  3. জিকিরবিহীন অন্তর মৃত: জিকিরহীন হৃদয় জীবিত নয় বরং মৃত। (বুখারি ৬৪০৭)
  4. কিয়ামতে আরশের ছায়া: গোপনে জিকিরকারীরা কিয়ামতের দিন আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাবেন। (বুখারি ৬৪৭৯)
  5. আল্লাহর রহমতে আচ্ছাদিত: জিকিরকারীদের ওপর রহমত ও প্রশান্তি নেমে আসে। (মুসলিম ৭০০)
  6. পরকালে মুক্তির উপায়: জিকির আজাব থেকে মুক্তির বড় উপায়। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ ১৬৭৪৫)
  7. গুনাহ মাফ হয়: জিকিরের মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়ে যায় এবং তা নেকিতে রূপান্তরিত হয়। (শুআবুল ঈমান ৫৩৪)
  8. শ্রেষ্ঠ আমল: জিকির আল্লাহর কাছে সোনাদানা খরচ ও জিহাদের চেয়েও উত্তম। (তিরমিজি ৩৩৭৫)
  9. আল্লাহর সান্নিধ্য: বান্দা যতক্ষণ জিকির করে, আল্লাহর রহমত তার সঙ্গে থাকে। (মুসনাদে আহমাদ ১০৯৬৮)
  10. আফসোসের কারণ: দুনিয়ার সময় জিকির ছাড়া কাটানো হলে জান্নাতে তার জন্য আফসোস করতে হবে। (শুআবুল ঈমান ৫১২)

অতএব, জিকির শুধু মুখের উচ্চারণ নয়, এটি অন্তরের প্রশান্তি, গুনাহ মাফ ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। আমাদের সবার উচিত প্রতিদিন বেশি বেশি জিকির করা।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে জিকিরের মাধ্যমে অন্তরের প্রশান্তি ও জান্নাতের পথ অর্জনের তাওফিক দান করুন।

এখানে ক্লিক করুন আমাদের উদ্যোগে অংশ নিতে।

Share:

সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সামাজিক জীবনে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা | ইসলামে ঐক্য ও সম্প্রীতির গুরুত্ব

ইসলাম ও সমাজকল্যাণ
মানবতার কল্যাণে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা

মানুষ সামাজিক জীব। একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া মানুষ একদিনও চলতে পারে না। তাই সামাজিক জীবনে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম হচ্ছে সমাজকল্যাণমূলক ধর্ম। মানব কল্যাণ ও সমাজকল্যাণই ইসলামের অন্যতম উদ্দেশ্য।

কুরআনে আল্লাহ বলেন— “তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীতির কাজে একে অপরকে সহযোগিতা কর, আর পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে একে অপরকে সাহায্য করো না।” (সূরা মায়েদাহ ৫:২)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— “দ্বীন হচ্ছে কল্যাণকামিতা, দ্বীন হচ্ছে কল্যাণকামিতা, দ্বীন হচ্ছে কল্যাণকামিতা।” আরেক হাদীসে তিনি বলেছেন, “আল্লাহ বান্দার সাহায্য করতে থাকেন যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকে।”

ইয়াতীম প্রতিপালন

সমাজের সবচেয়ে অসহায় হলো ইয়াতীম শিশু। কুরআনে অসংখ্যবার ইয়াতীমদের যত্ন, সম্পদ রক্ষা, দয়া-মায়া ও স্নেহ প্রদর্শনের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেছেন— “আমি ও ইয়াতীমের অভিভাবক জান্নাতে পাশাপাশি থাকব।”

বিধবাদের সহায়তা

দরিদ্র বিধবাদের সাহায্য করা ইসলামে ইবাদতের সমতুল্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন— “যে ব্যক্তি বিধবা ও অভাবীদের জন্য কাজ করে, সে যেন আল্লাহর পথে জিহাদ করছে, অথবা সারারাত নামাজ পড়ছে আর সারাবছর রোজা রাখছে।”

অসহায়কে খাদ্যদান

ক্ষুধার্ত, নিঃস্ব ও অভাবীদের খাদ্যদান ইসলামের একটি বড় আমল। কুরআনে আল্লাহ বলেন— “তারা আল্লাহর ভালোবাসায় অভাবগ্রস্ত, ইয়াতীম ও বন্দীদের খাদ্য দেয় এবং বলে— আমরা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তোমাদের খাওয়াই, তোমাদের কাছ থেকে কোনো প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা চাই না।” (সূরা দাহর ৭৬:৮-৯)।

অন্যদিকে যারা অভাবীদের খাওয়ায় না, কুরআনে তাদেরকে জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই সমাজকল্যাণমূলক কাজে সবার অংশগ্রহণ জরুরি।

ইসলামের মূল শিক্ষা হলো— মানব কল্যাণে কাজ করা, অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো, দয়া-ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়া এবং সমাজকে শান্তি ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করা।

মানবতার কল্যাণে আমাদের উদ্যোগে অংশ নিতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

Share:

শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কর্জে হাসানা মানবতার কল্যাণে সুদমুক্ত আর্থিক সহায়তা

কর্জে হাসানা
কর্জে হাসানা সুদমুক্ত মানবিক সহায়তা।

মানব সমাজে একজনের দুঃখ-কষ্টে অন্যজন এগিয়ে আসা একটি মহৎ গুণ। ইসলাম এমন একটি সুন্দর অর্থনৈতিক ধারণা দিয়েছে যা মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করার অনন্য উপায়—এটি হলো কর্জে হাসানা। কর্জে হাসানা মানে হলো কাউকে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া, যাতে সে তার প্রয়োজন মেটাতে পারে এবং পরবর্তীতে সামর্থ্য হলে ফেরত দিতে পারে।

কর্জে হাসানার মূল উদ্দেশ্য

  • দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষের সহায়তা করা
  • সমাজে দানশীলতা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি করা
  • সুদের মতো শোষণমূলক প্রথা থেকে মুক্তি
  • আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন

ইসলামে কর্জে হাসানার গুরুত্ব

“কে আছে যে আল্লাহকে কর্জে হাসানা দেবে, যাতে আল্লাহ তা বহুগুণে ফিরিয়ে দেন।” (সূরা বাকারা: ২৪৫)

এই আয়াত প্রমাণ করে যে, কর্জে হাসানা শুধু একজন মানুষকে সাহায্য করাই নয়, বরং এটি আখিরাতেও অগণিত পুরস্কার পাওয়ার উপায়।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ “ইসরা-ও-মেরাজের রাতে আমি জান্নাতের দরজায় দেখলাম লেখা আছে: সদকা দশ গুণ, আর কর্জ (ঋণ) আঠারো (১৮) গুণ। আমি জিজ্ঞাসা করলাম: হে জিবরীল, কর্জ সদকার চাইতে উত্তম কেন? তিনি বললেন: কারণ ভিক্ষুক ভিক্ষা চায় যদিও তার কিছু থাকে, কিন্তু ঋণগ্রহীতা কেবল তখনই ঋণ গ্রহণ করে যখন সে প্রকৃতপক্ষে অভাবগ্রস্ত।” — (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদীস: ২৪৩১)

কর্জে হাসানার সামাজিক উপকারিতা

  1. দরিদ্রদের সম্মান রক্ষা করে – তারা সাহায্য নেওয়ার বদলে ঋণ নেয়, যা তাদের আত্মমর্যাদা বজায় রাখে।
  2. সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলে – ধনী-গরিবের মধ্যে ভালোবাসা বাড়ে।
  3. সুদের বোঝা থেকে মুক্ত রাখে – কেউ বাধ্য হয়ে সুদখোরদের হাতে পড়ে না।
  4. অর্থের সুষম বন্টন করে – যার কাছে অর্থ আছে সে অন্যের কাজে লাগাতে পারে।

কর্জে হাসানা দেয়ার নীতি

  • সুদ বা অতিরিক্ত কিছু দাবি করা যাবে না
  • ঋণগ্রহীতাকে সময় দেওয়া উচিত যদি সে দেরিতে ফেরত দিতে চায়
  • গোপনে দেওয়া উত্তম যাতে কারো সম্মানহানি না হয়
  • সত্যতা ও আস্থা বজায় রাখা জরুরি

আজকের সমাজে কর্জে হাসানা

বর্তমান সমাজে সুদের ফাঁদ সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। সাধারণ মানুষ সামান্য প্রয়োজন মেটাতেও সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হয়। কর্জে হাসানা ব্যবস্থা থাকলে অনেকে ঋণের চাপ ছাড়াই ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তাই পরিবার, সমাজ ও সংগঠনগুলোকে কর্জে হাসানা কার্যক্রম চালু করা উচিত।

উপসংহার

কর্জে হাসানা কেবল একটি আর্থিক সাহায্য নয়; এটি মানবতার প্রকৃত প্রকাশ। সমাজে যদি এ ধরনের সুদমুক্ত ঋণ ব্যবস্থা চালু হয়, তবে অভাবী মানুষ স্বস্তি পাবে এবং ধনী-গরিবের মধ্যে ভালোবাসা ও আস্থা তৈরি হবে। ইসলাম যে সুন্দর জীবনব্যবস্থা দিয়েছে, কর্জে হাসানা তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।

মানবতার কল্যাণে আমাদের উদ্যোগে অংশ নিতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

Share:

বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নবীজির ভালোবাসা -ইমদাদ ফয়েজী প্রকাশ

নবীজির ভালোবাসা
আরবের মরু প্রান্তর

অনেক অনেক দিন আগে, আরবের মক্কা নগরে জন্ম নিলেন এক শিশু। তিনি বড় হলেন অনাথ হয়ে। তার বাবা ছিলেন না, মা-ও ছোটবেলায় মারা যান। কিন্তু দুঃখের মধ্যেও এই শিশুটি কখনো মিথ্যা বলেননি, কখনো কারো ক্ষতি করেননি।

সব উত্তম চরিত্রে সুসজ্জিত ছিলেন তিনি। এমনকি তিনি নবী হওয়ার আগেও সবাই তাকে আল-আমিন অর্থাৎ সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য মানুষ হিসেবে ডাকত। হ্যাঁ বন্ধুরা, এই শিশুই হচ্ছেন আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

নবীজি (সা.) আল্লাহর পাঠানো শেষ রাসুল। তিনি এসেছিলেন গোটা জগদ্বাসীকে আলোর পথ দেখাতে। পাপাচার–অনাচার থেকে মুক্ত করে জান্নাতি মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। ঐশী আলোয় উদ্ভাসিত নতুন এক পৃথিবী আমাদের উপহার দিতে। তিনি শিখিয়েছেন—আল্লাহ এক, শুধু তাঁর ইবাদত করতে হবে। সত্য কথা বলতে হবে। মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ করতে হবে। ভালো কাজে একে অন্যকে সাহায্য করতে হবে। ছোটদের দয়া করতে হবে, বড়দের সম্মান করতে হবে। অসহায়-দুর্বলদের প্রতি সদয় হতে হবে।

ছোট্ট করে একটি ঘটনা বলি, এক বৃদ্ধ নারী নবীজির আসা-যাওয়ার পথে প্রতিদিন কাঁটা-আবর্জনা ফেলে রাখতেন। যাতে নবীজির চলাফেরায় কষ্ট হয়। একদিন এর ব্যতিক্রম হলো। নবীজি (সা.) রাস্তায় এরূপ কিছু না পেয়ে তার খোঁজ নিতে গিয়ে দেখলেন ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নবীজি তাকে পানি পান করালেন, সেবাযত্ন করলেন। তিনি অবাক হয়ে বললেন, ‘এমন মানুষ আল্লাহর প্রেরিত নবী ছাড়া আর কেউ হতে পারেন না।’ বন্ধুরা, দেখো, শত্রুতার জবাব তিনি শত্রুতা দিয়ে দেননি, দিয়েছেন ভালোবাসা দিয়ে।

নবীজি (সা.) আমাদের বলে দিয়েছেন, ‘যে ছোটদের প্রতি দয়া করে না, বড়দের সম্মান করে না, সে আমার উম্মত নয়।’ নবীজি (সা.) আরো বলেছেন, ‘... যে তোমার ওপর জুলুম করে, তুমি তাকে ক্ষমা করো, যে তোমার ক্ষতি করে, তুমি তার উপকার করো।’

বন্ধুরা, আমরা যদি সত্যিই নবীজি (সা.)-কে ভালোবাসি, তবে শুধু মুখে বললেই হবে না। আমাদের নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে। সত্য কথা বলতে হবে এবং সব মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। মা-বাবা, শিক্ষক ও বড়দের মেনে চলতে হবে। প্রতিবেশী, আত্মীয় ও অভাবগ্রস্ত মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থাকতে হবে। কারো ক্ষতি করা যাবে না; বরং সাধ্যমতো সবার উপকার করতে হবে। মহান আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর জীবনে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।’

বন্ধুরা, এসো আমরা প্রতিজ্ঞা করি—আমরা নবীজি (সা.)-কে সত্যিকার অর্থেই ভালোবাসব, তাঁর শিক্ষা মেনে চলব, তাঁকে আমাদের একমাত্র আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করব। আমাদের জন্য তাঁর রেখে যাওয়া দুটি মূল্যবান সম্পদ—মহাগ্রন্থ আল-কোরআন এবং তাঁর সুন্নাহ পুরোপুরি অনুসরণ করার মাধ্যমে নবীজির প্রিয়জন আর মহান রবের প্রিয় বান্দা হয়ে উঠব।

মানবতার কল্যাণে আমাদের উদ্যোগে অংশ নিতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

Share:

আসসালামু আলাইকুম

কর্জে হাসানার ফজিলত

সদস্য হতে ক্লিক করুন

আপনার আখেরাত